পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর, MCQ SAQ ব্যাখ্যা ও রচনাধর্মী
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর : প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর, পথের দাবী গল্পের MCQ SAQ ব্যাখ্যাধর্মী, রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর লিখতে হয়, প্রশ্নমান ১, ৩ ও ৫ । Madhyamik Bengali Pather Dabi by Saratchandra Chattopadhyay | 10th Standard | এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
MCQ SAQ ব্যাখ্যাধর্মী, রচনাধর্মী গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের নমুনা উত্তর এখানে আলোচিত হয়েছে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী একটি গুরুত্বপূর্ণ গল্প।
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
পথের দাবী গল্পের MCQ SAQ
পথের দাবী
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পথের দাবী গল্পের M.C.Q
১. গিরিশ মহা পাত্র থানা শুদ্ধ লোকের মাথা ধরিয়ে দিয়েছিল —লেবুর তেলের উগ্র গন্ধে।
২. পরদিনই সুদূর ভামো নগরের উদ্দেশ্য যাত্রা করে অপূর্ব ট্রেনে চেপে বসেন —অপরাহ্নে।
৩. অপূর্বর পিতার বন্ধু হলেন —নিমাই বাবু।
৪. পথের দাবী যে পত্রিকায় প্রকাশিত —বঙ্গবাসী।
৫. রামদাস পেশায় ছিলেন —অ্যাকাউন্টেন্ট।
৬. আমার অবর্তমানে সমস্ত ভারই তো— তোমার কথাটি বলেছেন —বড়ো সাহেব।
৭. গিরিশ মহাপাত্রের দুজন বন্ধু লোক আসার কথা —এনাঞ্জাং থেকে।
৮. এমনি তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে — যে অভ্যাস হয়ে গেছে তা হল —অপমান সহ্য করা।
৯. দয়ার সাগর। পরকে সেজে দি নিজে খাই নে —বক্তা হলেন —জগদীশ বাবু।
১০. গিরিশ মহাপাত্রের বুক পকেটে ছিল —একটি বাঘ আঁকা রুমাল।
১১. আমি এখন তবে চলরুম কাকাবাবু — কাকাবাবু হলেন —পুলিশ ইন্সপেক্টর নিমাইবাবু।
১২. তুমি তো ইউরোপিয়ান নও — অপূর্বকে এ কথা কে বলেছিলেন? —বর্মা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর।
১৩. চোরের হাত থেকে অপূর্বকে টাকাকড়ি ছাড়া অন্য সমস্ত কিছুকে বাঁচিয়েছিল? —ক্রিশ্চান মেয়েটি।
১৪.অপূর্ব জাতিতে কি? —ব্রাহ্মণ।
১৫. নিমাই বাবু জগদীশ বাবুকে কোন ট্রেনের প্রতি দৃষ্টি দিতে বলেছিলেন? —রাতের মেল ট্রেনের প্রতি।
১৬. গিরিশ মহাপাত্রের পাঞ্জাবী কোন সিল্কের ছিল? —জাপানি।
১৭. গিরিশ মহাপাত্রের সঙ্গে অপূর্বর পুনরায় কোথায় দেখা হয়েছিল? —রেল স্টেশনে।
১৮. অপূর্ব রাজী হইয়াছিল — যে ব্যাপারে অপূর্ব রাজি হয়েছিল তা হল —রামদাসের স্ত্রীর পাঠানো মিষ্টান্ন গ্রহন করতে।
১৯.বাবুজি এসব কথা বলার দুঃখ আছে — কথাটি বলেছিল —সাহিল।
২০. ট্রেনে অপূর্ব কোন পাত্রে আহার সম্পন্ন করেছিল? —পিতলের পাত্রে।
২১. শস্তার টাস্তয় সবই কিছু কিছু শিখেছিলাম – বক্তা হলেন —গিরিশ মহাপাত্র।
২২. অপূর্বর লাঞ্ছনার কথা শুনে রামদাসের সুশ্রী গৌরবর্ণ মুখ ক্ষণকালের জন্য হয়ে ওঠে —আরক্ত।
২৩. কিন্তু এই জানোয়ারটিকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়বাবু — কথাটি বলেছেন —জগদীশ বাবু।
২৪. অপূর্বর কাছে অনেক বেশি অপমানজনক বলে মনে হয়েছে —বিপ্লবী সব্যসাচীকে।
২৫. অপূর্বকে প্ল্যাটফর্ম থেকে লাথি মেরে বের করে দিয়েছিল —ফিরিঙ্গি ছেলেরা।
২৬. সে হাত বাড়াইয়া বন্ধুর করমর্দন করিল — এখানে বন্ধুটি হলো —অপূর্ব ।
২৭. তোমার বাবু একটা ভুল হয়েছে —অপূর্বকে পুলিশের লোক ভাবা।
২৮. তেলের খনির কারখানা শ্রমিকরা চাকুরীর উদ্দেশ্যে কোথায় গিয়েছিল. —রেঙ্গুনে।
২৯. ভামো নগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা কালে অপুর্বের সঙ্গে ছিল —আর্দালি এবং অফিসের একজন হিন্দুস্থানী ব্রাহ্মণ পেয়াদা।
৩০. বলা কি সহজ রাম দাস —- যা বলার সহজ নয় তা হল —বিনা অপরাধে শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার কথা।
৩১. অত্যন্ত ফর্সা রং রৌদ্রে পুরিয়া যেন — হইয়াছে —তামাটে।
৩২. তার লাঞ্ছনা এই কালো চামড়ার নিচে কম জ্বলে না — কথাটি বলেছে —অপূর্ব।
৩৩. বাঙালি শ্রমিকদের টিনের তরঙ্গ ও ছোটো বড় পুটলি খুলে তদারক শুরু করে দিয়েছিলে —জগদীশ বাবু।
৩৪. পথের দাবী যে জাতীয় উপন্যাস —রাজনৈতিক।
৩৫. রাম হাসিয়া কহিল কিন্তু — ধরাই যে এদের কাজ। —বুনো হাঁস।
৩৬. বাবুজি ম্যাই নে আপকো তো জরুর কহা দেখা। — এখানে বাবুজি হলেন —গিরিশ মহাপাত্র।
৩৭. চুরি হয়েছিল যার ঘরে —অপূর্বর।
৩৮. অপূর্বর কাছে গিরিশ মহাপাত্র নিজেকে যে ধরনের মানুষ বলে উল্লেখ করেছে তা হল —ভারী ধর্মভীরু মানুষ।
৩৯. তোমার বাপু একটা ভুল হয়েছে —ভুলটা হল —অপূর্বকে পুলিশের লোক ভাবা।
৪০. বাবাই একদিন এর চাকরি করে দিয়েছিলেন — এর বলতে বোঝানো হয়েছে —নিমাই বাবুকে।
৪১. বাড়ির সব খবর ভালো তো —- জিজ্ঞেস করেন —রামদাস তলওয়ারকর।
৪২. নিমাই বাবু হাসিয়া ঘাড় নাড়িলে কহিলেন —তোমার নাম কি হে?
৪৩. গিরিশ মহাপাত্র গাজার কলকেটা কুড়িয়ে পেয়েছিল —পথে।
৪৪. যে লোকটার প্রতি তার অত্যন্ত সন্দেহ হইয়াছে এই লোকটি হলো —গিরিশ মহাপাত্র।
৪৫. সে যে বর্মাই এসেছে এ খবর সত্য — সে বলতে বোঝানো হয়েছে —বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক কে।
৪৭. তোমার চিন্তা নেই ঠাকুর —-এখানে ঠাকুর বলতে বোঝানো হয়েছে —তেওয়ারিকে।
৪৮. তা ছাড়া এত বড় বন্ধুটি হলেন —ক্রিশ্চান মেয়েটি।
৪৯. কিন্তু কদিনই বা বাঁচবে — উদ্দিষ্ট ব্যাক্তি বেশিদিন বাঁচবে না কারণ —সে অত্যান্ত রোগা এবং দুর্বল।
৫০. তেওয়ারি ঘরে ছিল না বর্মা নাচ দেখতে গিয়েছিল —ফায়ার।
৫১. গিরিশ মহাপাত্র কার ছদ্মনাম? —সব্যসাচীর।
৫২. গিরিশ মহাপাত্রের ফুল মজার রং কেমন ছিল? —সবুজ।
৫৩. গিরিশ মহাপাত্রের ট্যাক থেকে কি বেরি য়েছিল? —এক টাকা ছয় গন্ডা পয়সা।
৫৪. গিরিশ মহাপাত্র গাজর কলকেটা কুড়িয়ে পকেটে রেখেছেন —কারও কাজে লাগাতে পারে এই কথা ভেবে।
৫৫. গিরিশ মহাপাত্রের রোগা মুখের আশ্চর্যজনক অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যটি হলো —দুটি চোখের দৃষ্টি।
৫৬. পুলিশ স্টেশন এর সম্মুখের হল ঘরে কতজন বাঙালি বসেছিল? —জন ছয়েক।
৫৭. এনাঞ্জা কতজন বন্ধু আসবে বলে গিরিশ জানিয়েছিলেন? —দুজন।
৫৮. এই লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন —এই লোকটি হলেন —গিরিশ মহাপাত্র।
৫৯. পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে হাজির করা হয় —নিমাই বাবুর সামনে।
৬০. বিনা দোষে ফিরিঙ্গি যুবকরা কাকে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্মের বাইরে বের করে দিয়েছিল? —অপূর্ব কে।
৬১. গিরিশ মহাপাত্রের বুক পকেটে রাখা রুমালে কিসের ছবি ছিল? —বাঘের।
৬২. গিরিশ মহাপাত্র কে গাঁজা খেতে বারণ করেছিলেন? —নিমাই বাবু।
৬৩. চুরি করুক না করুক সাহায্য করেছে —যে সাহায্য করেছে সে হলো —তেওয়ারি।
৬৪. তার জামিন আমি হতে পারি —- বক্তা হলেন —নিমাই বাবু।
৬৫. লোকটা কাশিতে কাশিতে আসিল —-লোকটি হলেন —গিরিশ মহাপাত্র।
৬৬. ট্রেনে অপূর্বের ঘুম পুলিশের লোক কতবার ভাঙিয়েছিল? —তিনবার।
৬৭. অপূর্বের বাড়িতে চুরির দিন তেওয়ারি কোথায় গিয়েছিলেন? —ফয়ায়।
৬৮. গভর্নমেন্ট কত টাকায় না এরা বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করলে। —– বুনোহাঁস বলতে বোঝানো হয়েছে —বিদ্রোহীদের।
৬৯. এ শহরে আরো কিছুদিন নজর রাখা দরকার —– কোন শহরে? —রেঙ্গুন।
৭০. অপূর্ব কোন শ্রেণীর ট্রেন যাত্রী ছিল ভামো নগরে যাওয়ার সময়? —প্রথম শ্রেণীতে।
৭১. পথের দাবী কাহিনীটি কোন উপন্যাসের অন্তর্গত? —পথের দাবী।
৭২. অপূর্ব নিমাই বাবুকে কি বলে সম্বোধন করেছিল? —কাকাবাবু।
৭৩. গিরিশ মহাপাত্রের চুড়িদার পাঞ্জাবি কোন র এর ছিল? —রামধনু রং-এর।
৭৪. গিরিশ মহাপাত্রের বয়স কত বছর ছিল? —৩০-৩২ এর বেশি নয়।
৭৫. পথের দাবী কাহিনীটির লেখক কে? —শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
পথের দাবী গল্পের S.A.Q
১. তোমার চিন্তা নেই ঠাকুর —– কে কথাগুলি বলেছিলেন?
[উ] রামদাস তলওয়ারকর সাহস দেওয়ার জন্য তেওয়ারিকে কথা গুলি বলেছিলেন।
২. গিরিশ মহাপাত্র নিজের সম্পর্কে অপূর্বের কাছে কি বলেছিলেন?
[উ] গিরিশ মহাপাত্র অপূর্বের কাছে নিজেকে ধর্মভীরু লোক বলেছিলেন।
৩. ভামো যাত্রায় ট্রেনে অপূর্বর কে কে সঙ্গী হয়েছিল?
[উ] ভামো যাত্রায় ট্রেনে অপূর্বের সঙ্গে আরদালি এবং অফিসের একজন হিন্দুস্থানী ব্রাহ্মণ পিয়াদা সঙ্গী হয়েছিল।
৪. গিরিশ মহাপাত্রের চোখের দৃষ্টি কেমন ছিল?
[উ] এিশ বএিশ বছর কৃশ গিরিশ মহাপাত্রের চোখের দৃষ্টি ছিল গভীর জলাশয়ের মতো।
৫. এমন তো নিত্য নিয়তিই ঘটছে। —- কী ঘটছে?
[উ] পরাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য শ্বেতাঙ্গদের অত্যাচার সবসময় ঘটেছে বলে অপূর্ব মনে করে।
৬. রামদাসের স্ত্রী অপূর্বকে কি অনুরোধ করেছিল?
[উ] রেঙ্গুন প্রবাসী অপূর্বকে রামদাসের স্ত্রী অনুরোধ করেছিল মা কিংবা পরিজন না আসা পর্যন্ত তার কাছে আহার্য গ্রহণ করতে।
৭. আমার বড়ো লজ্জা —- লজ্জাটি কি?
[উ] আমার অর্থাৎ অপূর্বের লজ্জা হল একটি পুলিশের স্টেশনের কর্তা ইংরেজ চাটুকর নিমাই বাবু তার আত্মীয় ও তার বাবাই এনার চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন বলে।
৮. তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন? —- কোন বস্তুুটি পকেটে ছিল ?
[উ] শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী গদ্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিতে বস্তুটি হলো খানাতল্লাশি করতে গিয়ে গিরিশ মহাপাত্রের পকেট থেকে পাওয়া গাজর কলকাটি।
৯. প্রভেদের মধ্যে এখন কেবল —– প্রভেদ টা কি?
[উ] পুরোনো পরিচ্ছদ পরলেও গিরিশ মহাপাত্র বাঘ আঁকা রুমালকে পকেটের বদলে এখন কন্ঠে জড়িয়েছেন।
১০. পুলিশ গিরিশ মহাপাত্রের কাছ থেকে কি পেয়েছিল?
[উ] পুলিশ গিরিশ মহাপাত্রের কাছ থেকে ট্যাকে একটা টাকা ও ছ গন্ডা পয়সা পকেট থেকে লোহার কম্পাস, ও কাঠের ফুটরুল কয়েকটি বিড়ি একটা দেশলায় ও একটা গাজার কলকে পেয়েছিলো।
১১. বড়ো সাহেব কোন কোন অফিসে গন্ডগোলের কথা অপূর্ব কে বলেন?
[উ] ভামোর অফিসের পাশাপাশি ম্যানডালে শোএবো মিকতিলা প্রোম ইত্যাদি অফিসে গন্ডগোলের কথা বড় সাহেব অপূর্ব কে বলেন।
১২. গিরিশ মহাপাত্রের মাথার চুলের বর্ণনা দাও?
[উ] গিরিশ মহাপাত্রের মাথার সামনের দিকে বড় চুল থাকলেও ছোট করে কাটার কারণে কান ও ঘাড়ের দিকে বিরল কেশ ছিল।
১৩. তাহার ভরসা ছিল। —- কী ভরসা ছিল?
[উ] অপূর্ব ট্রেনের প্রথম শ্রেণীর যাত্রী হওয়ায় তার ভরসা ছিল প্রভাতকাল পর্যন্ত তার নিদ্রার ব্যাঘাত ঘটবে না।
১৪. পুলিশি তল্লাশীর মুখে পড়া বাঙালিরা রেঙ্গুনে এসেছিলেন কেনো?
[উ] পুলিশের তল্লাশীর মুখে পড়া জন ছয়েক বাঙালি উত্তর ব্রহ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানিতে মিস্ত্রির কাজ করতো। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য তারা রেঙ্গুনে এসেছিল চাকরির খোঁজে।
১৫. বড়ো মানুষের কথাটা শুনো। — কোন কথা শুনতে বলা হয়েছে?
[উ] রোগা ও দুর্বল গাঁজাখোর গিরিশ মহাপাত্রের শরীরের কথা ভেবে তাকে গাঁজা খেতে বারণ করে নিমাই বাবু বলেছেন, আর খেয়োনা। তার এই কথাটি শুনতে বলেছেন।
১৬. ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নিচে নামাইতে পারি। —- বক্তা কেন টেনে নামাতে পারেন?
[উ] প্রথম শ্রেণীর যাত্রী হলেও অপূর্ব ভারতীয়। যেকোনো অবস্থায় বিনা কারণে ভারতীয়দের বিরক্ত লাঞ্চিত অপমানিত করা চলে তাই বক্তা তাকে ট্রেন থেকে টেনে নামাতে পারেন।
১৭. মনে হলে দুঃখ লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যায়। —- কোন কথা মনে করে অপূর্বের এই মনোবেদনা?
[উ] রেঙ্গুন রেল স্টেশনে ফিরিঙ্গি যুবকদের দ্বারা অন্যায় ভাবে নিগৃহীত অপূর্বের হার পাজরা ভাঙ্গেনি বলে অন্য সাক্ষীরা খুশি হলে অপমানের তীব্রত তাই অপূর্বের এই মান বেদনা সৃষ্টি হয়।
১৮. ক্রিশ্চান মেয়েটি সম্পর্কে অপূর্ব কি বলেছিল?
[উ] চোর তাড়িয়ে দরজায় তালা দেওয়া ক্রিশ্চান মেয়েটি দক্ষতা একজন অ্যাকাউন্টারেও বিশ্বময় তৈরি করবে বলে অপূর্ব বলেছিল।
১৯. কিন্তুু তোমার বাবু একটা ভুল হয়েছে। —- কি ভুল হয়েছিল?
[উ] গিরিশ মহাপাত্র অপূর্বকে পুলিশের লোক ভেবে নিয়েছিল। এবং সে ভাবেই কথা বলেছে কিন্তুু অপূর্ব পুলিশের লোক নয় ভুল এটাই ।
২০. ট্রেনে অপূর্বের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেছিল কেনো?
[উ] ট্রেনে রাতের বেলা পুলিশের লোক অপূর্বের নামধাম ঠিকানা লিখে নেওয়ার জন্য বার তিনেক তাকে ডেকে তুলেছিল এতে তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেছিল।
২১. অপূর্বের প্রতিবাদে পুলিশের সাব ইনস্পেকটর কি বলেছিল?
[উ] নৈশ ট্রেন যাত্রায় প্রথম শ্রেণী যাত্রী অপূর্ব পুলিশের আচরনে ক্ষোভ প্রকাশ করলে সাব-ইনস্পেক্টর জানান অপূর্ব ইউরোপীয় নয় বলে এ আচরণ স্বাভাবিক।
২২. তাহার দুই চোখ ছল ছল করিয়া আসিল — কেন তাহার এরকম হয়েছিল ?
[উ] বিনা দোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের কাছে অপূর্বের প্রহৃত হওয়ার কথা শুনে তাহার অর্থাৎ রামদাসের চোখ ছল ছল করছিল।
২৩. আমার দেশের চেয়ে তো আপনার নন। —- কে বক্তা আপনার নন?
[উ] ব্রিটিশ ভক্ত পুলিশ অফিসার নিমাই বাবু পিতৃ তুল্য হলেও আপূর্বের দেশের চেয়ে অপমানজনক নন।
২৪. এমনি এদের অভ্যাস হয়ে গেছে — কি অভ্যাস হয়ে গেছে?
[উ] ব্রিটিশদের অন্যায় অত্যাচার প্রতিবাদীনভাবে মেনে নেওয়া এবং এতে লজ্জিত অপমানিত বোধ না করায় যে অভ্যাস হয়ে গেছে হিন্দুস্থানী মানুষদের সেই অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে।
২৫. গিরিশ মহাপাত্রের পোশাকের কিরকম বর্ণনা আছে?
[উ] গিরিশ মহাপাত্রের পরিধেয় জাপানি সিল্কের রামধনু রং এর চুরিদার পাঞ্জাবির বুক থেকে বাঘ আঁকা একটি রুমালের কিছু অংশ দেখা যায়।
২৬. পকেটে গাজার কলকে থাকার কারণ হিসাবে গিরিশ মহাপাত্র কি বলেছিল?
[উ] নিজে না খেলেও কুড়িয়ে পাওয়া কলকে অন্যের জন্য পকেটে রেখেছে বলে গিরিশ বলেছিল।
২৭. পুলিশ নির্বোধ আহস্মক কে বানিয়েছিল বলে অপূর্ব মনে করে?
[উ] ব্রিটিশ পুলিশকে নির্বোধ আহম্মক বানিয়েছিল বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশ।
২৮. আমারো তো তাই বিশ্বাস — বক্তার কি বিশ্বাস?
[উ] গিরিশ মহাপাত্র বলেছেন যে কপালের লিখন খন্ডাবে না তার কথাকে সমর্থন করে বক্তা অপূর্ব বলেছেন যে এটা তারও বিশ্বাস।
২৯. তাছাড়া এতো বড়ো বন্ধু। — কাকে বন্ধু বলা হয়েছে?
[উ] চাকরি সূত্রে রেঙ্গুন প্রবাসী অপূর্বের ঘরের টাকা করি চোরের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল যে ক্রিশ্চান মেয়েটি তাকে বন্ধু বলা হয়েছে।
৩০.স্টেশনে অপূর্বের কি দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হয়েছিল?
[উ] প্ল্যাটফর্মে ফিরিঙ্গি যুবকদের লাথি খাওয়ার দুঃখজনক অভিজ্ঞতা নিরপরাধ অপূর্বের হয়েছিল।
৩১. রামদাস হাসিয়া কহিল —-রামদাস হেসে কি বলেছিল?
[উ] রামদাস হেসে বলেছিল বুনো হাঁস ধরাই বাংলাদেশের পুলিশদের কাজ। অপূর্বের চোর ধরা তাদের কর্তব্য নয়।
৩২. ও নিয়ম রেলওয়ে কর্মচারীর জন্য — কোন নিয়মের কথা বলা হয়েছে?
[উ] ট্রেনে কোনো কারণে প্রথম শ্রেণী যাত্রীদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানো আইনবিরুদ্ধ। এটাই প্রচলিত নিয়ম। এই নিয়মের কথায় এখানে বলা হয়েছে।
৩৩. পথের দাবি পাঠ্যাংশটি কার লেখা কোন মূল উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে?
[উ] পথের দাবী পাঠ্যাংশটি কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী শীর্ষক উপন্যাস থেকে গৃহীত হয়েছে।
৩৪. কিরূপ সাদা সয় ব্যাক্তি উনি — এমন বলা হয়েছে কেনো?
[উ] গিরিশ মহাপাত্রের পকেট থেকে একটি গাজার কলকে পাওয়া গেল সে গাঁজা খায় না বলে জানিয়েছে। তবে কলকে রেখেছে অপরের প্রয়োজন এর কথা ভেবে। তাই মিথ্যা কথাটি কথাাক্ষ।
৩৫. কেবল এজন্যই যেন সে আজও বাচিয়া আছে। — কিসের জন্য?
[উ] গিরিশ মহাপাত্রের অত্যন্ত গভীর জলাশয় এর মত চোখ দুটির অতল তলে তার প্রাণ শক্তি লুকিয়ে থাকার মৃত্যু সেখানে প্রবেশ করতে আজও বেঁচে আছে সে।
৩৬. নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল — কাকে কেনো নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হলো?
[উ] পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক যিনি গিরিশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য নিমাই বাবুর সামনে হাজির করা হলো।
৩৭. ক দনই বা বাঁচবে। — কেনো এমন কথা বলা হয়েছে?
[উ] রোগা এবং দুর্বল গাঁজাখোর গিরিশ মহাপাত্র একটু কাশির পরিশ্রমে হাপাতে থাকে। তার প্রতি করুণা বসত নিমাই বাবু তার গাজার নেশা সরানোর জন্য এ কথা বলেন।
৩৮. আজ থেকে মাথায় তুলে নিলাম — বক্তা কী মাথায় তুলে নিলেন?
[উ] দেশবাসী মা ভাই বোনেদের ব্রিটিশের সহস্র কোটি অত্যাচার থেকে যারা উদ্ধার করতে চাই তাদের আপন বলার মধ্যে দুঃখই থাকা বক্তা তা মাথায় তুলে নেন।
৩৯. এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করার দরকার নেই বড়োবাবু। —- এমন উক্তির কারণ কি?
[উ] গিরিশ মহাপাত্র তার সাজ পোশাকের সৌখিনতাই মিথ্যাবাদী তাই বিশেষ করে মাথায় লেবুর তেলের গন্ধে পুলিশ কর্মচারী জগদীশ বাবুকে অত্যন্ত বিরক্ত করেছিলেন তাই এমন উক্তি করা হয়েছে।
৪০.সংসারের মেয়াদ বোধ করি বেশি দিন নাই। —কেন এমন বলা হয়েছে?
[উ] রোগা এবং দুর্বল গিরিশ মহাপাত্র সামান্য কাশির পরিশ্রমে যেভাবে হাঁফাচ্ছিল তা দেখে মনে হয়েছিল যে তার মৃত্যু আসন্ন তাই এমন কথা বলা হয়েছে।
৪১. নিমাইবাবু ট্রেন তার প্রতি নজর রাখতে বলেছেন কেনো?
[উ] পুলিশ ইন্সপেক্টর নিমাই বাবু খবর পেয়েছিলেন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বর্মায় এসেছেন। তাকে গ্রেফতার করতেই তার বর্মায় আশা। গিরিশ মহাপাত্র কে ছেড়ে দেওয়ার পর তাই রাতের মেল ট্রেন টার দিকে নজর রাখতে বলেছেন।
৪২. কৈ এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি? — কোন ঘটনা?
[উ] বিনা দোষে কতগুলি ফিরিয়েঙ্গি ছেলে একদিন অপূর্বকে প্ল্যাটফর্ম থেকে লাথি মেরে ফেলে দিলে স্টেশন মাস্টারের কাছে প্রতিবাদ জানিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন তিনি এই ঘটনার কথাই বলা হয়েছে।
৪৩. এই লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন — কেনো এমন উক্তি?
[উ] উল্লেখিত লোকটির চেহারা বেশভূষার বাহার পরিপাট্য ছিল হাস্যকর। উচ্চশিক্ষিত বিপ্লবী সব্যসাচীর মল্লিক রূপে তাকে মটেই সন্দেহ করা যায় না। তাই এমন উক্তি।
৪৪. লোকটি কাশিতে কাশিতে আসিল —- কোন লোকটির কথা বলা হয়েছে?
[উ] কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী পাঠ্য অংশ থেকে গৃহীত এই অঞ্চল লোকটি বলতে গিরিশ মহাপাত্র ওরফে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলা হয়েছে।
৪৫. মিথ্যাবাদী কোথাকার —- মিথ্যাবাদী বলার কারণ কি?
[উ] গিরিশ মহাপাত্রের পকেট থেকে গাজার কলকে বেরিয়েছে হাতও ছিল গাঁজা বানানোর চিহ্ন। তবুও সে গাজার নেশার কথা অস্বীকার করেছে। তাই জগদীশবাবু তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন।
৪৬. একবার ভেবে দেখুন —- কি ভাববে বলা হয়েছে?
[উ] পুলিশ ইন্সপেক্টর নিমাইবাবু যাকে খুঁজছেন সেই বিপ্লবী মল্লিকের সঙ্গে গিরিশ মহাপাত্রের কালচারের অনেক প্রভেদ এই কথাটা ভাবতে বলা হয়েছে।
৪৭. পুলিশের স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল — কি দেখা গেলো?
[উ] পুলিশ স্টেশন এর প্রবেশ করে দেখা জন ছয়েক বাঙালি মোট ঘাট নিয়ে বসে আছে। জগদীশবাবু তাদের তরঙ্গ ও ছোট বড়ো পুটলি খুলে তদারক শুরু করেছেন।
পিডিএফ লিঙ্ক নিচে
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন, মান ৩
(১) “এতক্ষণে অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল।” – কার পরিচ্ছদের কথা বলা হয়েছে? সেই পরিচ্ছদের বর্ণনা দাও।
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত ‘পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট’ গিরীশ মহাপাত্র অর্থাৎ সব্যসাচী মল্লিকের পরিচ্ছদের কথা এখানে বলা হয়েছে।
- সব্যসাচীর মাথার সামনের দিকে বড়ো বড়ো চুল, অত্যন্ত ছোটো করে ছাঁটা বলে ঘাড় ও কানের দিক বিরল কেশ বলে মনে হয়। মাথায় চেরা সিঁথি ও তেলের স্বল্পতায় মাথার চুল কঠিন ও রুক্ষ। মাথার চুল থেকে লেবুর তেলের গন্ধ ভেসে আসছে। রামধনু রং-এর জাপানি সিল্কের চুড়িদার, পাঞ্জাবির বুক পকেটে বাঘ-আঁকা রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। পায়ে বার্নিশ করা পাম্প শু, সবুজ মোজা যা লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা, হাতে হরিণের শি-এর হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি ছিল।
(২) “যাঁকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখো।”—কে, কাকে খুঁজছেন? ‘তার’ কী ধরনের ‘কালচরের’ কথা বলা হয়েছে?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত দারোগা নিমাইবাবু বিপ্লবী সব্যসাচীকে খুঁজছেন। কথাটি অপূর্ব বলেছিল।
- বিপ্লববাদে বিশ্বাসী সব্যসাচী অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিত। তিনি জার্মানি থেকে চিকিৎসাশাস্ত্র ইত্যাদি বিভিন্ন বিদ্যায় শিক্ষালাভ করেছেন। এছাড়া আমেরিকাতেও অধ্যয়ন করা উচ্চশিক্ষিত সব্যসাচীর উন্নত ‘কালচার’ বা ‘সংস্কৃতমনস্কতার কথা অপুর্ব বলেছেন।
(৩) ‘বুড়ো মানুষের কথাটা শুনো।”—বুড়ো মানুষ কে? তার কোন্ কথা শুনতে বলা হয়েছে?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত ‘বুড়ো মানুষ’ হলেন প্রবীণ দারোগা নিমাইবাবু।
- বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে পুলিশি তল্লাশিতে অন্যান্য অনেক জিনিসের সঙ্গে একটা গাঁজার কলকে বের হয়। পুলিশের প্রশ্নের উত্তরে সে জানায় যে, সে নিজে গাঁজা না খেলেও কুড়িয়ে পাওয়া কলকেটিকে অন্যের সেবার জন্য রেখেছে। দারোগা নিমাইবাবু অশক্ত শরীর ও কাশতে কাশতে হাঁপাতে থাকা গিরীশের কথা বিশ্বাস করেননি। দুর্বল শরীরের গিরীশকে তিনি গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন।
(৪) ‘চুরি না করুক সাহায্য করেচে!’—কে, কাকে বলেছিলেন? প্রসঙ্গটি লেখ।
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত এই কথাগুলি অপূর্ব বলেছিলেন তাঁর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরকে।
- অফিসে যখন অপূর্ব কর্মরত ছিলেন তখন তার বিশ্বস্ত পরিচারক তেওয়ারি বর্মা নাচ দেখতে ফয়ায় যায়। এই সুযোগে তালা ভেঙে চোর যখন চুরি করতে থাকে তখন ওপরতলায় থাকা ক্রিশ্চান মেয়েটির চিৎকারে চোর পালায় ও সেই মেয়েটি নিজে অন্য একটি তালা লাগিয়ে দেয়। অফিস ফেরত বিধ্বস্ত অপূর্বকে ভারতী নামের মেয়েটি এ কথা জানিয়েছিল। এর সামান্য আগে এই পরিবারটির সঙ্গে অপূর্বদের নানা সংঘাত হয়েছিল বলে পরিচারক তেওয়ারির দৃঢ় বিশ্বাস ভারতী নামের মেয়েটি চুরি না করলেও চুরিতে সাহায্য করেছিল। রামদাসকে চুরি সংক্রান্ত ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে অপূর্ব পরিচারক তেওয়ারির আশঙ্কার কথাকেই ব্যক্ত করেছেন।
(৫) “হঠাৎ হাসির ছটায় যেন দম আটকাইবার উপক্রম হইল।’—কার এরকম হয়েছিল? কেন হয়েছিল?
- শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে এরকম অবস্থা হয়েছিল অপূর্বের।
- পুলিশস্টেশনে অপূর্ব যে বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিল সে কথা মনে পড়ায় তার হাসি আর বাঁধ মানে না। পুলিশের লোকেরা যে গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল, তার অদ্ভুত পোশাক, গাঁজার কলকে রাখার কারণ জেনে অপুর্বের হাসি থামতে চায় না।
(৬) “গভর্নমেন্টের কত টাকাই না এরা বুনোহাঁসের পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করলে!’—’এরা’ বলতে কারা? প্রসঙ্গটি ব্যাখ্যা করো।
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত ‘এরা’ বলতে ইংরেজ শাসকদের বিশ্বস্ত পুলিশবাহিনীর কথা বলা হয়েছে।
- বিপ্লবী তরুণ সব্যসাচী ক্রমশই ব্রিটিশ রাজশক্তির কাছে ভীতিপ্রদ হয়ে উঠেছিলেন। রেঙ্গুন পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অক্লেশে নিজেকে গিরীশ মহাপাত্র বলে অভিহিত করেন। সাধারণ চেহারা ও পোশাকের সব্যসাচী কেমন শক্তিশালী ব্রিটিশ পুলিশকে নাস্তানুবাদ করেন সে কথা অপূর্ব রামদাসকে সকৌতুকে বিবৃত করেন। বুনোহাঁস যেমন ইচ্ছেমতো জায়গায় উড়ে যায়, তেমনই সব্যসাচীও সরকারি টাকায় পুষ্ট পুলিশকে বোকা বানিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো জায়গায় যেতে পারেন।
(৭) “উপরন্তু এই সূত্রে দেশটাও একবার দেখা হইবে।–সূত্রটি কী? কে দেশ দেখবেন?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত অপূর্বর দেশ দেখা হবে।
- অফিসের বড়ো সাহেব একটি টেলিগ্রাম নিয়ে অপুর্বের ঘরে আসেন। বার্মায় থাকা বোথা কোম্পানির সমস্ত অফিসে গোলযোগের কারণে স্বাভাবিক ব্যাবসায়িক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বড়োসাহেব তাই চান অপূর্ব আপাতত রেঙ্গুন ত্যাগ করে যেন সমস্ত কার্যালয়গুলিতে যান।এরফলে বিভিন্ন অফিস দেখার সূত্রে বর্মা দেশটাও দেখার বাসনা পূর্ণ হবে অপূর্বর।
(৮) “তুমি তো ইউরোপিয়ান নও।”–কে, কাকে বলেছিলেন? ইউরোপিয়ান না হওয়ার ফল কী হয়েছিল?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত ভামোর উদ্দেশ্যে যাওয়া ট্রেনযাত্রী অপূর্বকে এই কথাগুলি বলেছিলেন বর্মা পুলিশের জনৈক সাব-ইন্সপেক্টর।
- বিপ্লবী সব্যসাচীর বর্মা আসার খবর পেয়ে আতঙ্কিত ব্রিটিশ প্রশাসন ট্রেনযাত্রী বিভিন্ন অ-ইউরোপিয়ানকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। প্রথম শ্রেণির যাত্রী অপূর্বও একাধিকবার রাতে তল্লাশির মুখে পড়ে প্রতিবাদী হন। কিন্তু পরাধীন জাতির কালো চামড়ার লোকের প্রতিবাদ অবহেলিত হয়। বর্মা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের আচরণে এই উক্তিটির মধ্য দিয়ে সেই দাম্ভিকতাই প্রকাশিত হয়।
(৯) ‘অপমান আমাকে কম বাজে না।’—বক্তা কাকে এ কথা বলেছিলেন? কোন্ অপমান তাঁকে ব্যথিত করেছিল? [অথবা] ‘মনে হলে দুঃখে লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যাই’–কোন ঘটনা মনে হলে বক্তার এই প্রতিক্রিয়া হয়? [অথবা] “কই এ ঘটনাতো আমাকে বলেন নি?’— বক্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি তাঁকে কোন্ ঘটনা বলেন?
- কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে অপূর্ব এই কথাগুলি রামদাস তলওয়ারকরকে বলেছিলেন।
- চাকুরি করতে রেঙ্গুনে আসার পর বাঙালি যুবক অপূর্ব রেলস্টেশনে একদল ফিরিঙ্গির হাতে নির্মমভাবে অপমানিত হন। স্টেশনে পরাধীন দেশের কালো চামড়ার যুবক অপূর্বকে লাথি মেরে ফিরিঙ্গি যুবকেরা ফেলে দিলে প্রতিকারের আশায় স্টেশন মাস্টারের কাছে গেলে তিনিও দুর্ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে সেখানে থাকা স্বদেশীয়রা অপূর্বের হাড়-পাঁজরা ভাঙেনি বলে বরং খুশিই হয়। নিজের অপমান ও নিজের দেশবাসীদের কাপুরুষতা অপূর্বকে গভীরভাবে পীড়িত করে।
(১০) ‘পুলিশ-স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল’— পুলিশ-স্টেশনে প্রবেশ করে কী দেখা গেল?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ শীর্ষক পাঠ্যাংশের অন্যতম চরিত্র অপূর্ব চুরির অভিযোগ জানাতে পুলিশস্টেশনে এসে দেখে সামনের হলঘরে জন-ছয়েক বাঙালি মোট-ঘাট নিয়ে বসে আছে৷ জগদীশবাবু তাদের টিনের তোরঙ্গ ও ছোটো-বড়ো পুঁটলি খুলে তদারকি শুরু করে দিয়েছেন। বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বলে যাকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহ হয়েছে সেই লোকটির নাম গিরীশ মহাপাত্র। তাকে একটা আলাদা ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। এরা সবাই বার্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানায় মিস্ত্রির কাজ করত। এদের নাম-ধাম-বিবরণ লিখে নেওয়া হচ্ছে।
(১১) ‘সহসা আশঙ্কা হয় সংসারের মিয়াদ বোধকরি বেশি দিন নাই।’–কার সম্পর্কে, কেন এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে?
- ‘পথের দাবী’ পাঠ্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে গিরীশ মহাপাত্র সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে।
- বয়স ত্রিশ-বত্রিশের গিরীশ মহাপাত্র ছিলেন যেমন রোগা তেমনি দুর্বল। তার ফরসা শরীর রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে নিমাইবাবুর সামনে দাঁড়ানোর সময় তিনি কাশতে কাশতে আসেন। সামান্য কাশির পরিশ্রমেই তিনি হাঁপাতে শুরু করেন। তাঁর হাঁপ-ধরা, ব্যাধিগ্রস্ত দুর্বল শরীরের দিকে তাকিয়ে সহজেই বোঝা যায় কোনো এক রোগে শরীরটা তার দ্রুত ক্ষয়ের দিকে ছুটে যাচ্ছে। তার মৃত্যু আসন্ন। তাই এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে।
(১২) ‘বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলো আনাই বজায় আছে’—বাবুটির সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্যের কারণ লেখ।
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশের ‘বাবু’টি বলতে এখানে স্টেশনে গিরীশ মহাপাত্রের কথা বলা হয়েছে।
- স্বাস্থ্যের দিক থেকে গিরীশ মহাপাত্র যেমন রোগা তেমনি দুর্বল। কিন্তু গায়ে তার জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। পরনে বিলেতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সুক্ষ্ম শাড়ি। পকেটে বাঘ আঁকা রুমাল। পায়ে সবুজ রঙের ফুল মোজা—হাঁটুর ওপর লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা, পায়ে বার্নিশ করা পাম্প শু। হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া একগাছি বেতের ছড়ি। বিশেষভাবে ছাঁট দেওয়া মাথার চুলে অপর্যাপ্ত লেবুর তেল। সাজের এই বাহার দেখে এই মন্তব্য করা হয়েছে।
(১৩) ‘ইহা যে কত বড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল।–ইহা বলতে কী বোঝানো হয়েছে? কীভাবে প্রমাণ হলো সেটা ভ্রম?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার অন্তর্গত অপূর্ব ভামো যাত্রাকালে ট্রেনের প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে আশা করেছিলেন—প্রভাতকাল পর্যন্ত তার নিদ্রার ব্যাঘাত ঘটবে না। ‘ইহা’ বলতে তাঁর এই আশার কথাই বলা হয়েছে।
- অপূর্বের এই আশা একটা বড়ো ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে কয়েকটি স্টেশন পরেই। কারণ, সেই রাতের মধ্যে তিন বার তাঁর ঘুম ভাঙিয়ে পুলিশের লোক তাঁর নাম, ধাম ও ঠিকানা লিখে নিয়েছে। প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে যে নিরাপত্তা, শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য তাঁর প্রাপ্য ছিল ইউরোপীয় না হওয়ায় তিনি তা পান নি।
(১৪) ভামো নগরে যাত্রাকালে কীভাবে অপূর্বকে বিরক্ত করা হয়েছিল? এর প্রতিবাদের ফল কী হয়েছিল?
- ‘পথের দাবী’ রচনাংশে অপূর্ব ভামো নগরে যাত্রাকালে প্রথম শ্রেণির যাত্রীর প্রাপ্য সুবিধা পাননি। রাতের মধ্যে বার তিনেক তার ঘুমভাঙিয়ে পুলিশের লোক তাঁর নাম, ধাম ও ঠিকানা লিখে নেওয়ার নামে বিরক্ত করেছিলেন।
- সাহেব কটু কণ্ঠে জবাব দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি ইউরোপিয়ান নন। নিজেকে প্রথম শ্রেণির যাত্রী বলে উল্লেখ করে অপূর্ব বলেছিলেন যে, রাতে তার ঘুমের বিঘ্ন তারা করতে পারেন না। সেই ইন্সপেক্টর হেসে বলেছিলেন যে, তিনি পুলিশ। ইচ্ছে করলে তিনি তাকে টেনে নীচে নামাতে পারেন।
(১৫) “বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন।”—বক্তা কে? তার বাবা কাকে কী চাকরি করে দিয়েছিলেন?
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবী’ গদ্যাংশ থেকে নেওয়া অংশটির বক্তা অপূর্ব হালদার।
- বাঙালি পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু অপূর্বর বাবার বন্ধু। তাঁর বাবাই তাঁকে পুলিশের চাকরি দিয়েছিলেন। রেঙ্গুন পুলিশ পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে ধরতে গিয়ে জাহাজঘাট থেকে যাদের ধরে আনে, তাদের মধ্যে একজনকে সন্দেহ হলেও বাঙালি পুলিশ অফিসার নিমাইবাবুর মতো ব্যক্তিদের মনে হয়, যাকে তাঁরা খুঁজছেন উক্ত ব্যক্তি তিনি নন, তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরূপ ঘটনায় অপূর্ব মনে করে যে, সরকার নিমাইবাবুর মতো পুলিশের বড়ো কর্তাদের জন্য কতটাই না ব্যয় করছে, অথচ সঠিক কাজ তারা করতে পারছে না। এই প্রসঙ্গেই অপূর্ব জানান যে, তাঁর বাবাই নিমাইবাবুকে পুলিশের চাকরি করে দিয়েছিলেন। আসলে নিমাইবাবুর মতো পুলিশকর্তাদের এই ব্যর্থতার জন্য অপূর্ব লজ্জিত বলে জানান।
[পথের দাবী ১৫টি ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নের উত্তর এর পিডিএফ লিংক নিচে দেখুন]
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর, রচনাধর্মী প্রশ্ন মান – ৫
পথের দাবী
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
[১] “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে”–বাবুটি’ কে? তার স্বাস্থ্যের বর্ণনা দাও।
[উ] শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্তর্গত ‘পথের দাবী’ রচনাংশ থেকে গৃহীত হয়েছে। বাবুটি বলতে সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের কথা এখানে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যের বর্ণনা = পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে পুলিশকর্তা নিমাইবাবুর সামনে উপস্থিত করানো হয়। ত্রিশ-বত্রিশ বছর বয়সি সব্যসাচীকে যখন আনা হয় তখন প্রবল কাশির আধিক্য লক্ষ করা গেল। তার উজ্জ্বল গৌরবর্ণ রোদে তামাটে হয়ে গেছে এবং প্রবল কাশির কারণে তিনি অত্যন্ত হাঁপিয়ে ওঠেন।ভগ্নস্বাস্থ্যের গিরীশ মহাপাত্রকে দেখলে মনে হয়, একটা দুরারোগ্য রোগ যেন তাঁকে প্রবলভাবে গ্রাস করতে চায়।
রুগ্ন শরীরে প্রবল ব্যতিক্রমী হলো তাঁর উজ্জ্বল চোখগুলি। গিরীশের উজ্জ্বল চোখের অদ্ভুত দৃষ্টি তাঁর ক্ষীণ প্রাণশক্তিকে উপেক্ষা করে জীবনের আবেগকে যেন ব্যক্ত করে। ভগ্নস্বাস্থ্যের গিরীশ মহাপাত্রকে রেঙ্গুনে দেখে দারোগা নিমাইবাবু অপূর্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন এই বাঙালি বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে।
[২] “এতক্ষণে অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল।”–‘তাহার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তার পরিচ্ছদের বর্ণনা দাও।
[উ] অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্তর্গত ‘পথের দাবী’ রচনাংশ থেকে গৃহীত এই অংশে ‘তাহার’ বলতে রেঙ্গুনে আসা বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের কথা বলা হয়েছে।
পরিচ্ছদের বর্ণনা = ব্রিটিশ রাজশক্তির বিরোধিতা করা সব্যসাচী বর্মায় এসেছেন খবর পেয়ে দারোগা নিমাইবাবু সক্রিয় হন। পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে যখন রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে আনা হয় তখন তাঁর ভগ্নপ্রায় নিস্তেজ স্বাস্থ্য দেখেন নিমাইবাবু। সেখানে অন্য কাজে উপস্থিত অপূর্বও তাঁকে লক্ষ করেন।
নিজেকে গিরীশ মহাপাত্র বলে পরিচয় দেওয়া সব্যসাচীর বিচিত্র সাজসজ্জা অপূর্বের মনে কৌতুকের সৃষ্টি করে। গিরীশের মাথার সামনের দিকে বড়ো বড়ো চুল থাকলেও অত্যন্ত ছোটো করে কাটার জন্য ঘাড় ও কানের দিক প্রায় কেশ শূন্য বলে মনে হয়। মাথায় চেরা সিঁথিতে তেলের অপ্রতুলতার জন্য রুক্ষ কেশদাম দেখা যায়। সেই কঠিন রুগ্ন কেশ থেকে নেবুর তেলের গন্ধ বের হয়ে অদ্ভুত এক পরিবেশ তৈরি করে।
গিরীশের পরিধানে রয়েছে রামধনু রং-এর জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি। সেই পাঞ্জাবির বুকপকেট থেকে বাঘ-আঁকা একটি রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। গিরীশের পায়ে রয়েছে সবুজ রং-এর ফুল মোজা, হাঁটুর ওপরে লাল ফিতা দিয়ে তা বাঁধা, বার্নিশ করা ‘পাম্প শ্যু’র তলাটা মজবুত করতে চেয়ে লোহার নাল দিয়ে তা বাঁধানো। গিরীশের হাতে ছিল হরিণের শিং-এর হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। গিরীশের এই বিচিত্র পোশাক-পরিচ্ছদ অপূর্বের কাছে কৌতুকর হয়ে ওঠে।
[৩] ‘বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলো আনাই বজায় আছে’—বাবুটি কে? তাঁর সাজসজ্জার পরিচয় দাও। (২০১৭)
[উ] কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে উল্লিখিত বাবুটি গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশধারী বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক।
সাজসজ্জা = বর্মা-ওয়েল-কোম্পানির তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রি গিরীশ মহাপাত্র চেহারার দিক থেকে যেমন রোগা তেমনি দুর্বল। তবে তাঁর সাজ-পোশাকের শৌখিনতা বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। তাঁর মাথার সামনের দিকে বড়ো বড়ো চুল, কিন্তু ঘাড় ও কানের দিকে চুল একেবারে নেই বললেই চলে। মাথায় চেরা সিঁথি। কঠিন ও রুগ্ণ চুলে লেবুর তেল ঢেলেছেন অপর্যাপ্ত পরিমাণে। তার নিদারুণ গন্ধে ঘর ভরে উঠেছে ৷ গায়ে তাঁর জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবিটির বুক পকেটে বাঘ-আঁকা রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। উত্তরীয় নেই। পরনে বিলিতি মিলের কালো মকমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি। পায়ে সবুজ রং-এর ফুলমোজা। হাঁটুর ওপরে লাল ফিতে দিয়ে মোজা বাঁধা হয়েছে। বার্নিস করা পাম্প শু। এর তলাটা মজবুত ও টেকসই করার জন্য আগাগোড়া লোহার নাল দিয়ে বাঁধানো। হাতে একগাছি হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। দিন কয়েকের জাহাজের ধকলে সবকিছুই নোংরা হয়ে উঠেছে।
[৪] ‘কই এ ঘটনা তো আমাকে আগে বলেন নি?”—ঘটনাটি কী? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কেন বক্তাকে তা বলেন নি?
[উ] প্রথম অংশ = কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশের বাঙালি যুবক অপূর্ব রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে একবার ফিরিঙ্গিদের বর্ণবিদ্বেষী মনোভাবের শিকার হয়ে বড়ো লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছিলেন। কতকগুলি ফিরিঙ্গি ছেলে বিনা দোষে তাঁকে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল। অপূর্ব এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ছুটে গিয়েছিলেন স্টেশন মাস্টারের কাছে। স্টেশন মাস্টার সেই অপরাধের গুরুত্ব বিচার না করে বর্ণবিদ্বেষী মনোভাবের পরিচয় দেন। দেশি লোক হয়ে অপূর্ব ফিরিঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, এটাকে সহ্য করতে না পেরে তিনি তাঁকে কুকুরের মতো দূর করে দেন স্টেশন থেকে। এখানে এই ঘটনার কথাই বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় অংশ = ঘটনাটি অপূর্ব তাঁর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরকে আগে বলেননি। বলা সহজও নয়। এ ঘটনা যেমন দুঃখজনক তেমনি অপমানকর। অপূর্বের লজ্জা আরও বেড়ে গেছে স্টেশনে উপস্থিত অন্যান্য হিন্দুস্থানিদের মনোভাব জেনে। এই অপমানটা কারও গায়ে লাগেনি। অপমান সহ্য করা তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। ফিরিঙ্গি ছেলেদের লাথির চোটে অপূর্বের হাড়-পাঁজরা ভেঙে যায়নি শুনেই তারা খুশি হয়েছিল। ঘটনা মনে হলে অপূর্ব নিজেই মাটির সঙ্গে মিশে যান। তাই রামদাসকে বলেননি।
[৫] ‘পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল।”—‘পথের দাবী’ পাঠ্যাংশে সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কী জানা যায়? তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হয়?
[উ] প্রথম অংশ = অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ পাঠ্যাংশে সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে জানা যায় যে, গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে তিনি রেঙ্গুনে উপস্থিত হয়েছেন সাধারণ শ্রমজীবী হিসেবে। পুলিশস্টেশনে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবুর সামনে উপস্থিত করা হয়। শীর্ণ ও অত্যন্ত দুর্বল মানুষটির বিচিত্র পোশাক ও উপস্থিতি এক অদ্ভুত পরিবেশ তৈরি করে। গিরীশ মহাপাত্রের মাথার সামনের দিকে রয়েছে বড়ো চুল, ঘাড় ও কানের দিকের চুল ছোটো করে ছাঁটা। মাথায় চেরা সিঁথি ও সেখান থেকে লেবুর তেলের উৎকট গন্ধ অভূতপূর্ব এক পরিবেশ তৈরি করে। পরিধানে রয়েছে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। এ ছাড়া বিলাতি মিলের কালো মখমলের সূক্ষ্ম শাড়ি, সবুজ মোজা, বার্নিশ করা পাম্প-শু চরিত্রটিকে বিচিত্র করে।
দ্বিতীয় অংশ = বুদ্ধিদীপ্ত উজ্জ্বল চোখের অধিকারী বছর তিরিশ-বত্রিশের শীর্ণ গিরীশ মহাপাত্রের মাথা থেকে নির্গত লেবুর তেলের উৎকট গন্ধে পুলিশ কর্মীদের মাথা ধরে যায়। নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রের হাতে গঞ্জিকা সেবনের নিদর্শন দেখলেও সে অবলীলায় গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে। অবলীলায় গিরীশ মহাপাত্র বলে যে, সে অন্যের প্রয়োজনে গাঁজার কলকে সাজিয়ে দেয়। এককথায় গিরীশ মহাপাত্রের পোশাক-সাজসজ্জা দেখে, তার শিক্ষার পরিচয় পেয়ে কেউই তাঁকে সব্যসাচী হিসাবে সন্দেহ করে না। অপূর্ব নিজেই জানিয়েছিল—‘যাঁকে খুঁজছেন তাঁর কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন।’
[৬] আমি ভীরু কিন্তুু তাই বলে অবিচারের দণ্ড ভোগ করার অপমান আমাকে কম বাজে না রামদাস। — বক্তা কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? তিনি কোন অবিচারের দন্ড ভোগ করেছেন?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এখানে অন্যতম চরিত্ররূপে অপূর্ব রেঙ্গুনে এসে পরিচিত হয়েছে রামদাস তলওয়ারকরের সঙ্গে। তার সঙ্গে বিপ্লবী সব্যসাচীর প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে অপূর্ব নিজের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। এবং তার মনে পড়ে যায় প্ল্যাটফর্মে ফিরিঙ্গি ছেলেদের দ্বারা এবং স্টেশন মাস্টার মশায়ের দ্বারা লাঞ্ছিত এবং অপমানিত হওয়ার কথা। তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
অপূর্ব একদিন কতগুলি ফিরিঙ্গি ছেলের দ্বারা বিনা দোষে লাঞ্চিত হন। ছেলেগুলি তাকে লাথি মেরে প্লাটফর্ম থেকে বের করে দেয়। এই লাঞ্ছনা এবং অপমানের প্রতিবাদ জানাতে অপূর্ব ছুটে গিয়েছিলেন স্টেশন মাস্টারের কাছে। কালো চামড়া দেশি লোকের প্রতি তার অন্তরের ঘৃণাবোধকে উগ্র করে তোলেন। তিনি তাকে কুকুরের মত দূর করে দেন স্টেশন থেকে।
[৭] শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী গদ্যাংশে অবলম্বনের অপূর্ব চরিত্র বিশ্লেষণ করো?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এই রচনাংশে বর্ণিত রেঙ্গুনে আগত শিক্ষিত বাঙালি যুবক অপূর্বের কতগুলি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।
- (ক) পরাধীনতার যন্ত্রণা তাকেও কুরে কুরে খায়। একসময় তিনি স্বদেশী আন্দোলনের যোগ দিয়েছিলেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি তার আন্তরিক শ্রদ্ধা ভক্তি স্বদেশপ্রাণ হৃদয়টিকে উজ্জ্বল করে তোলে।
- (খ) স্টেশন মাস্টারের বর্ণবিদ্বেষী মনোভাবের কথা তিনি ভাবেন। নিজেকে ভীরু বলে মেনে নিয়েও তিনি হিন্দুস্তানি লোকের অপমান সহ্য করার মনোবৃত্তিকে সহ্য করতে পারেন না।
- (গ) তিনি জানিয়েছেন, ফিরিঙ্গি ছেলেদের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ভামো নগরে যাত্রার সময় ট্রেনে পুলিশ অন্যায় ভাবে বারবার তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটালে তিনি তার প্রতিবাদ করেছিলেন।
- (ঘ) অপূর্ব ব্রিটিশ স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত এ দেশের প্রশাসনিক পদে আসীন মানুষের প্রতি তিনি সন্তুুষ্ট নন। কিন্তু তার জন্য সৌজন্যবোধ বিসর্জন তিনি দেন। অপরদিকে এক ক্রিশ্চান মেয়ে চোরের হাত থেকে তার ঘরের জিনিসপত্র রক্ষা করায় তিনি কৃতজ্ঞতা ও প্রকাশ করতে বলেননি।
ভারতবর্ষের শিক্ষিত অর্জিত জাতীয়তাবোধ সম্পন্ন বাঙালি যুবক শ্রেণির প্রতিনিধি বলা যায় অপূর্বকে।
[৮] বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে কিন্তুু শখ ষোল আনাই বজায় আছে। — বাবুটি কে? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এখানে বাবুটি হলেন গিরিশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশী সব্যসাচী মল্লিক-এর কথা বলা হয়েছে।
এখানে বর্মা অয়েল কম্পানি তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রি গিরিশ মহাপাত্র চেহারার দিক থেকে যেমন রোগা তেমনি দুর্বল। কিন্তু তার সাজ পোশাক সৌখিনতা বিশেস ভাবে চোখে পড়ার মতো। তার মাথায় চেরা সিঁথি। রুক্ষ চুলের লেবুর তেল ঢেলেছেন অপর্যাপ্ত পরিমাণে। তার নিদারুণ গন্ধ। গায়ে তার জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুরিদার পাঞ্জাবি। এবং বুক পকেটে বাঘ আঁকা রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। পরনে বিলাতি মিলের কালো, মকমল পারের সুক্ষ শাড়ি। বার্নিশ পড়া পাম্প শু। হাতে একগাছি হরিণের শিং এর হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি ইত্যাদি। অর্থাৎ সৌখিনতার দিক দিয়ে গিরিশ মহাপাত্র বাবুগোছের মানুষ বটে।
[৯] এই জানোয়ারটিকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়বাবু — কার উক্তি? এই উক্তির কারণ কি?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এই আলোচ্য উদ্ধৃতির বক্তা হলেন পুলিশ কর্মচারী জগদীশবাবু।
জগদীশ বাবু তথা গোটা পুলিশ বাহিনী বিপ্লবী পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক এর গতিবিধি নজর রাখতে ও গ্রেফতার করতে রেঙ্গুনে এসেছেন। রুচি ও মর্যাদার দিক থেকে সব্যসাচীর সঙ্গে সামান্য হলেও সাদৃশ্যযুক্ত ব্যক্তিকে ওয়াচ করা তাদের কর্তব্য। বর্মা অয়েল কোম্পানি তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রী গিরিশ মহাপাত্র কে সবচেয়ে সন্দেহ করা হলেও তার সাজপোশাক, রুচি ইত্যাদির প্রবণতা যেমন হাস্যকর তেমনি বিরক্তকর। সাজপোশাকে সৌখিনতার পরিচয় দিতে গিয়ে গিরিশ মহাপাত্রের বিচিত্র গতি সম্পন্ন অদ্ভুত ধরনের এক হাস্যকর চিত্র হয়ে উঠেছেন। তার মাথার সামনের দিকে বড় বড় চুল ধার ও কানের দিকে নেই বললেই চলে। এবং চেরাসিটি। মাথায় লেবুর সুগন্ধযুক্ত তেল ঢেলেছেন। গায়ে তার জাপানি রঙ এর চুড়িদার পাঞ্জাবি ইত্যাদি।
মানুষটির পকেটে গাঁজার কলকে এবং হাতে গাঁজা। শরীরটাও গাঁজাখোরদের মত। তাকে বারবার জিজ্ঞাসা করা সত্ত্বেও গাঁজা খাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। অন্যকে সেজে দেওয়ার জন্যই গাজার কল্কেটা সঙ্গে রেখেছেন। গিরিশ মহাপাত্রের এ হেন বিচিত্র সৌখিনতার অদ্ভুত মিথ্যা বলার প্রবণতায় এবং মাথায় লেবুর গন্ধ যুক্ত পুলিশ কর্মচারী জগদীশবাবু এমন মন্তব্য করেছে এখানে।
[১০] যাকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন —- কার কালচারের কথা ভেবে দেখতে বলেছেন? কেনো তার কালচারের কথা ভাবতে বলা হয়েছে?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এখানে বাংলার বীর বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক-এর কালচারের কথা বলা হয়েছে।
নিমাই বাবু সামনে হাজির করা হলে দেখা গেল তিনি একজন বয়স ত্রিশ বত্রিশের রুগ্ন এবং অত্যন্ত দুর্বল ব্যক্তি। পোশাকের সৌখিনতার পরিচয় দিতে গিয়ে নিজেকে হাস্যাস্পদ করে তুলেছেন। চেরা সিঁথি, অপর্যাপ্ত পরিমাণে লেবুর তেল ঢেলেছেন মাথায়। এবং গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। যার বুক পকেটে একটি বাঘ আঁকা রুমাল। এবং হাঁটুর ওপরে লাল টিপে দিয়ে বাধা। হাতে হরিণের হাতল দেওয়া এক গাছি বেতের ছড়ি ইত্যাদি।
অসাধারণ পারদর্শী বিজ্ঞান ও চিকিৎসা শাস্ত্রে। তিনি উন্নত কালচারের একজন ব্যক্তি। এত বিরাট ভূমিকা সম্পন্ন একজন ব্যক্তির কালচারের সঙ্গে গিরিশ মহাপাত্রের কালচারের প্রভেদটা ভেবে দেখার মত। আবার এও হতে পারে যে অপূর্ব উদ্দেশ্য নিমাই বাবুকে ভুল পথে চালিত করতে গিয়ে ব্যবধানটিকেই বড় করে তুলেছেন।
[১১] আমি কালই বার হয়ে যেতে পারি —- কে কোথায় যেতে চাইলেন? কেনো চাইলেন?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। উচ্চপদস্থ কর্মী অপূর্ব অফিসের কাজে রেঙ্গুন ছেড়ে ভামো যেতে চাইলেন।
বোথা কোম্পানির বড় সাহেব একটা টেলিগ্রাম নিয়ে অপূর্বের কাছে আসেন। কোম্পানির সমস্ত কার্যালয়ে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তাই বড় সাহেব চান সাহেব চান গোটা কোম্পানির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অধিকারী অপূর্ব যেন আপাতত রেঙ্গুন ত্যাগ করে দেশের নানা প্রান্তে থাকা অফিসগুলিতে যান তিনি।
রেঙ্গুনের পরিবেশ সেই মুহূর্তে প্রতিকূল ছিল না অপূর্বের কাছে। কোম্পানির বিভিন্ন অফিসে যাওয়ার সূত্রের অপরিচিত বর্মা দেশ তাকে চাক্ষুষ দেখার একটা সুযোগ এসে পড়াই অপূর্ব অত্যন্ত আনন্দিত হন। এবং বড় সাহেব তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বোরখা কোম্পানির অফিসে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে অপূর্ব তা মেনে নেন। তাই বড় সাহেবের কতায় অপূর্বকে ভামো যেতে চেয়েছিলেন এই গদ্যাংশে।
[১২] সেদিন কেবল তামাশা দেখতে গিয়েছিলাম — কে কোন দিন তামাশা দেখতে গিয়েছিলেন?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। অপূর্ব গিয়েছিলেন রেঙ্গুন পুলিশ স্টেশনে বাড়িতে চুরির অভিযোগ জানাতে। সব্যসাচী ব্রিটিশ পুলিশকে নাস্তানুবাদ করেছিলেন বিপুলভাবে, যা তামাশা বলে মনে হয়েছিল অপূর্বের।
পরাধীন ভারতবর্ষের বিপ্লবীর হাত থেকে ব্রিটিশ রাজ কেউ উত্থান করার জন্য শিক্ষিত তরুণ সব্যসাচী মল্লিক ছিলেন অতি সক্রিয়। দারোগা নিমাইবাবুর জিজ্ঞাসা বাদে সময় সব্যসাচী অনায়াসে নিজেকে তেলের খনি শ্রমিক গিরিশ মহাপাত্র বলে পরিচয় দেন। এবং অতি সাধারণ চেহারা ও বিসদৃশ পোশাক পরিহিত সভ্যসাচী ওরফে গিরিশ অনায়াসে পুলিশকে ফাঁকি দেয়। মাথায় উৎকট গন্ধযুক্ত তেলমাখা গিরিশকে অতি নিম্নশ্রেণীর মানুষ বলেই পুলিশ মনে করেন। এবং পুলিশ কর্মী জগদীশবাবু এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই।
সব্যসাচী কর্তৃক পুলিশ প্রশাসনকে নাস্তানাবুদ করার ঘটনা দেখেন । যে ব্রিটিশ পুলিশ বিশ্বজড়া ইংরেজ সাম্রাজ্যের অন্যতম গর্ভের বিষয় তাকেও গিরিশ মহাপাত্রের আপাত নিরীহ আচরণ ও সামঞ্জস্যহীন পোষাক পরিধানের মাধ্যমে সব্যসাচী প্রবল ভাবে নাস্তানাবুদ করে ।
[১৩] বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে — বাবুটি কে? তার স্বাস্থ্যের বর্ণনা দাও?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এখানে গিরিশ মহাপাত্র কে রেঙ্গুন পুলিশ স্টেশনে পুলিশকর্তা নিমাই বাবুর সামনে উপস্থিত করানো হয়।
এিশ- বএিশ বছর বয়সী সব্যসাচীকে যখন আনা হয় তখন প্রবল কাশির অধিক্য লক্ষ্য করা গেলো। রোদে তামাটে হয়ে গেছে এবং কাশির প্রাবল্যে তিনি অত্যন্ত হাঁপিয়ে ওঠেন। এবং গিরিশকে দেখলে মনে হয় কি একটা দুরারোগ্য রোগ যেন তাকে প্রবাল ভাবে গ্রাস করতে চায়। শরীরের প্রবল ব্যতিক্রম হল তার উজ্জ্বল চোখগুলি। এবং গিরিশের উজ্জ্বল চোখ দৃষ্টি তার ক্ষীণ ও প্রাণশক্তিকে উপেক্ষা করে জীবনের আবেগকে যেন ব্যক্ত করে। বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরিশ মহাপাত্র কে রেঙ্গুনে দেখে দারোগা নিমাই বাবু, অপূর্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন যে বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে। তাই এই গদ্যাংশে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
[১৪] পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক কে নিমাই বাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল — পথের দাবী পাঠ্যাংশে সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কি জানা যায়? তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কি পরিস্থিতি তৈরি হয়?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এই গদ্যাংশে জানা যায়, সব্যসাচী সম্পর্কে গিরিশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশ তিনি রেঙ্গুনে উপস্থিত হয়েছেন সাধারণ শ্রমজীবী হিসাবে।
গিরিশ মহাপাত্রকে পুলিশের বড়কর্তা নিমাইবাবুর সামনে উপস্থিত করা হয়। এবং মানুষদের বিচিত্র পোশাক ও উপস্থিতি এক অদ্ভুত পরিবেশ তৈরি করে। গিরিশ মহাপাত্রের সামনের দিকে রয়েছে চুল এবং কানের দিকে চুল ছোটো করে কাটা। মাথায় চেরা সিঁথি ও সেখান থেকে লেবুর তেলের উৎকৎ গন্ধ। পরিধান রয়েছে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি । নিমাই বাবু গিরিশ মহাপাত্রের হাতে গঞ্জিকা সেবনের নির্দেশন দেখলেও সে গাজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। এবং বুদ্ধিদীপ্ত উজ্জ্বল চোখের অধিকারী বছর এিশ – বএিশ গিরিশ মহাপাত্রের নির্গত লেবুর তেলের উৎপাত গন্ধে পুলিশের মাথা ধরে যায়।
[১৫] অপূর্ব চরিত্র চিত্রনে লেখকের দক্ষতার পরিচয় দাও?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এই রচনা অংশে আমরা দেখতে পাই অপূর্বের মধ্য অনেকগুলি বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাই সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো —
- আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি :- অপূর্বের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপাই আধুনিক মুক্ত দৃষ্টির কারণেই। এবং নিমাইবাবুর মতো আত্মীয় পুলিশ কর্মীরাও সেখানে তুচ্ছ।
- দেশ দেখার আশঙ্কা :- নতুন দেশ দেখার আশঙ্কায় অপূর্ব বাংলাদেশের পরিচিত আশ্রয় ত্যাগ করে বর্মায় আসেন। রেঙ্গুন থেকে আবার দেশের অন্যত্র যাবার সুযোগ পেলে আনন্দ গ্রহণ করেন।
- সৌজন্যবোধ :- ব্রিটিশ পুলিশের একান্ত সেবক নিমাই বাবুর বাহ্য আচরণের প্রতি অপূর্ব কখনোই অসৌজন্য দেখান না।
- গভীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা :- অপূর্ব প্রথম দর্শনেই গিরিশ মহাপাত্রের আড়ালে বিপ্লবী সব্যসাচী কে চিনতে পেরেছিলেন। পুলিশ যেখানে ব্যর্থ হয় সেখানে অপূর্ব এই দক্ষতা বিস্ময়কর।
- স্বাধীনচেতা মনোভাব :– সব্যসাচী কে ধরার জন্য নিমাই বাবু তৎপরতা বা প্ল্যাটফর্মে ফিরিঙ্গি যুবকদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়া তাকে স্থির থাকতে দেয় না।
- তীক্ষ্ণ বুদ্ধি :– গিরিশ মহাপাত্রের আড়ালে এই সব্যসাচী কে চিনতে না পেরে অপূর্ব অত্যন্ত সক্রিয় হন। তাই দারোগার নিমাই বাবুকে অনায়াসে বলেন, “যাকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন “।
[১৬] এত বড় কার্য কুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে হয়নি হে তলওয়ারকর — মেয়েটির কার্য কুশলতার পরিচয় দাও?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। অপূর্ব রেঙ্গুনের যে পাড়ায় ভাড়া নিয়েছিলেন সেখানে থাকার জন্য তার ওপরে এক ক্রিশ্চান মেয়ে ভাড়ায় ছিল। সেই পরিবারের মেয়ে ভারতীয় কার্যকৌশলতার কথা বলা হয়েছে।
চুরির উপযুক্ত ক্ষেত্রে বিবেচনা করে চোর তালা ভেঙে অপূর্ব দের ঘরে ঢোকে। সে সময় সেই ভারতীয় মেয়েটি ওপর থেকে চুরি দৃশ্য দেখে চিৎকার করে জুড়ে দিলে চোর পালিয়ে যায়। এবং ভারতীয় নিজেদের একটি তালা দরজায় লাগিয়ে দেন। অফিসে প্রত্যাগত হয়ে অপূর্ব চুরি যাওয়া ও না যাওয়া জিনিসের তালিকা তৈরি করে দেয়। তারপর দেখা যায় সেই মহিলাটি এত নিখুঁত ও যথাযথ হয়েছিল যে অপূর্ব রামদাসের কাছে বিস্ময় গোপন করতে পারেননি। ভারতীয় এই বাস্তবতাবোধ ও বিপদকালের সঠিক কাজ করার সিদ্ধান্ত দেখে অপূর্ব তাকে কার্যকুশলা মেয়ে বলে অভিহিত করেন যথার্থভাবে।
[১৭] কৈ এ ঘটনা আমাকে বলেননি —- ঘটনাটা কি?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। সুদীর্ঘকাল ধরে এ দেশ শ্বেতাঙ্গ ইংরেজদের পদানত ছিল। শাসক সম্প্রদায় পরাধীন এ দেশের মানুষদের প্রতি অত্যন্ত উন্নাসিক ধারণা পোষণ করতেন। বিনা কারণে এক দেশের অপমান করার মতো এক ধরনের আনন্দ তারা পেতেন।
নিজের দেশের প্ল্যাটফর্ম থেকে তৃষ্ণার্ত অপূর্বকে একদল বিকৃত রুচির দাম্ভিক ফিরিঙ্গি যুবক লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়। এবং অপূর্ব পরাধীন দেশের নাগরিক হওয়ায় অপূর্বকে ফিরিঙ্গি যুবকদের এই আচরণের মুখোমুখি হতে হয়। স্টেশনে এদেশীয়রা অনেক সংখ্যায় থাকলেও সুদীর্ঘ পরাধীনতার কারণে মানুষেরা কিছু মাত্র প্রতিবাদ করে না। প্রতিবাদ করার জন্য স্পেশাল মাস্টারের কাছে যান। ভারতীয় যুবক শ্বেতাঙ্গ বিরোধী কথা সেখানে গৃহীত হলো না তাকে কুকুরের মত তাড়িয়ে দেওয়া হল। এই ঘটনায় অপূর্বের মুখে অনেক পরে শোনেন তার সহকর্মী ব্রাহ্মণ রামদাস।
[১৮] অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরিয়া হাসি গোপন করিল —- অপূর্ব কে? তার হাসির এবং হাসি গোপন করার কারণ কী?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। অপূর্ব হলেন একজন শিক্ষিত বাঙালি যুবক। যিনি কাজের সূত্রে রেঙ্গুনে এসেছিলেন।
সব্যসাচীকে গ্রেফতারের সূত্র পুলিশ ইন্সপেক্টর নিমাই বাবু ও তার দলবল বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানায় কয়েকজন মিস্ত্রিকে আটকে রেখেছিলেন। তার মধ্যে সন্দেহজনক ব্যক্তি হলেন গিরিশ মহাপাত্র। কিন্তু তার সাজ পোশাকের সৌখিনতা বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। তার মাথার সামনের দিকে বড় বড় চুল। এবং কানের দিকে একেবারে নেই বললেই চলে। চেরা সিথি। জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। বুক পকেটে বাঘ আঁকা রুমাল। হাতে হরিণের সিং এর হাতল একগাছি বেতের ছড়ি ইত্যাদি। গিরিশ মহাপাত্রের সাজ পোশাকের এই অদ্ভুত সৌখিনতা অপূর্বের হাসির উদ্যোগ করেছিল।
[১৯] তিনি ঢের বেশি আমার আপনার —- বক্তা আপনার বলতে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন তা লেখো?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এই রচনা অংশটির বক্তা হলেন অপূর্ব।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিশ্বজুড়ে তাদের শক্তির জয় ঘোষণা করতে অকুণ্ঠিত ছিল। অন্যদিকে এদেশের স্বাধীনতা প্রিয় বিপ্লবী দেশকে মুক্ত করতে চেয়েছেন প্রাণের বিনিময়ে। সব্যসাচীর মত বিপ্লবীরা ব্যক্তিগত প্রাপ্তিকে তুচ্ছ করে স্বাধীনতার জন্য জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। একদিকে সরকারি চাকুরে যারা, তাদের স্থির লক্ষ্য ছিল ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণ করা ভারতীয়দের নির্মমভাবে দমন করা। উন্নত রুচি ও শিক্ষার অধিকারী তরুণ বিপ্লবীর গতিবিধির ওপর নজর রাখার জন্য রেঙ্গুনে আসা দারোগা নিমাই বাবুর প্রতি তাই প্রচ্ছন্ন বিরূপ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু যে সমস্ত বিপ্লবীরা প্রাণ দান করে দেশকে মুক্ত করতে অগ্রণী ভূমিকা নেয় তাদের প্রতি তরুণ আদর্শবাদী অপূর্ব অনেক বেশি শ্রদ্ধাশীল। তাই সব্যসাচীর মতো বিপ্লবীদের অপূর্ব অনেক আপন মনে করেন স্বাধীন সত্তার কারণেই।
[২০] বুড়ো মানুষের কথাটা শুনো — বুড়ো মানুষকে? তিনি কি করেন? কাকে তিনি এ কথাগুলি বলেছিলেন? কি কথা শুনতে বলেছিলেন?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। এখানে বুড়ো মানুষ বলতে দারোগা নিমাই বাবুর কথা বলা হয়েছে। এখানে বুড়ো মানুষ হলেন নিমাইবাবু, যিনি একজন পুলিশ কর্তা। নিমাইবাবু এই কথাগুলি বলেছিলেন নিজেকে গিরিশ মহাপাত্র বলে অভিহিত করা সব্যসাচীকে।
গাঁজা খায় কিনা তা নিমাই বাবু জানতে চাইলে গিরিশ বলেন যে তিনি গঞ্জিকা সেবন করেন না। পুলিশি জিজ্ঞাসা উত্তরে বলেন কয়েকটি কুড়িয়ে পেয়েছেন এবং অন্যের প্রয়োজনের কথা ভেবে তা রেখেছেন। নিমাইবাবু অবশ্য গিরিশের চেহারায় গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণ খুঁজে পেলে গিরিশ প্রবলভাবে তা অস্বীকার করে। এই অবস্থায় গাঁজা খেলে তার যে আরো বিপন্ন হবে তাতে তার সন্দেহ নেই। এ ধরনের নেশা দ্রুত আয়ু নিঃশেষে সহায়ক হয় বলে নিমাই বাবু গিরিশকে তা থেকে বিরত থাকার সৎ পরামর্শ দেন।
[২১] গিরিশ মহাপাত্র চরিত্রটি এই রচনা অংশে কতটা বাস্তবসম্মত হয়েছে আলোচনা করো?
[উ] ‘পথের দাবী’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। অত্যন্ত সাধারণ চেহারার অধিকারী সব্যসাচী বিদেশি শিক্ষার পাশাপাশি একাধিক ভাষায় সমান পারদর্শী। ব্রিটিশ রাজশক্তিকে উৎখাত করতে চাওয়া বিপ্লবী সব্যসাচী রেঙ্গুনে এসেছে শুনে দারোগা নিমাই বাবু অতি সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
সব্যসাচীকে তিনি নানা জিজ্ঞাসাবাদ করেও তাকে ধরতে পারেন না। তার সাধারণ চেহারা ও পোশাক নিয়ে নিজেকে গিরিশ মহাপাত্র বলে অভিহিত করে সহজেই পুলিশের সতর্ক দৃষ্টিকে ফাঁকি দেন তিনি। তেলের খনির সাধারণ শ্রমিকের আড়ালে বহু বিদেশি উপাধীর অধিকারী মানুষটির দিন দেশেও তাকে সহজে সন্দেহ মুক্ত হতে সাহায্য করে। মাথায় ব্যবহার করা উৎকট তেলের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশকর্মী জগদীশ বাবু তাই বলেছিলেন যে তেলের গন্ধে গোটা থানাশুদ্ধ লোকের মাথা ধরিয়ে দিল ইত্যাদি।
থানায় বিসদৃশ পোষাক পরা গিরিশ মহাপাত্র কে দেখে অপূর্ব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তার সব্যসাচী হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে নিমাইবাবুকে বলেছিলেন যাকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন। ঘটনাসূত্রে গিরিশ-এর উপদেশে স্নেহের ছোঁয়া পাওয়া যায়। দারোগা নিমাইবাবু যখন গিরিশকে যেতে বলেন তখন জগদীশ বাবুর কথায় সব্যসাচী লিখিত অভিনয় যথার্থ রূপ পায়। গিরিশ মহাপাত্রের রচনা অংশটি ফুটে উঠেছে এখানে।
দশম শ্রেণির বাংলা অন্যান্য লেখা
- জ্ঞানচক্ষু [প্রশ্ন উত্তর]
- অসুখী একজন [প্রশ্ন উত্তর]
- আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি [প্রশ্ন উত্তর]
- আফ্রিকা [প্রশ্ন উত্তর]
- হারিয়ে যাওয়া কালি কলম [প্রশ্ন উত্তর]
- বহুরূপী [প্রশ্ন উত্তর]
- অভিষেক [প্রশ্ন উত্তর]
- সিরাজদৌল্লা [প্রশ্ন উত্তর]
- প্রলয়োল্লাস [প্রশ্ন উত্তর]
- পথের দাবী [প্রশ্ন উত্তর]
- সিন্ধুতীরে [প্রশ্ন উত্তর]
- অদল বদল [প্রশ্ন উত্তর]
- অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান [প্রশ্ন উত্তর]
- বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান [প্রশ্ন উত্তর]
- নদীর বিদ্রোহ [প্রশ্ন উত্তর]
- কোনি [প্রশ্ন উত্তর]
PDF Download